বিদেশে কর্মী পাঠানোর নামে ৪ এমপির প্রতিষ্ঠান ২৪ হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়েছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুবাদে মাত্র সাতাইশ মাসে দুই ডিজিএম হাতিয়েছেন বিশ কোটি টাকা, গড়েছেন বিপুল সহায় সম্পদ। মাদারগঞ্জে হাজার কোটি টাকা নিয়ে উধাও হওয়া সমবায় সমিতির পাশাপাশি সংসদ সদস্যের স্ত্রী স্কুল শিক্ষিকা কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার কাহিনি ফাঁস হয়েছে এরইমধ্যে। ময়মনসিংহের প্রতিটি থানার ওসিদের ঘুসকাণ্ডে তাদের স্ত্রীরা কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে উঠেছেন। অপরদিকে এক পাবনা জেলার দশ বিড়ি কারখানা কীভাবে প্রতিবছর সরকারের সাতশ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে তার বিবরণও জানছেন পাঠকরা। খাগড়াছড়িতে সাবেক মন্ত্রীর অঘোষিত ব্যবসায়িক পার্টনার হয়েই বাদাম বিক্রেতা অমল শত কোটি টাকার মালিক বনেছেন। নেতাদের লুটপাটের বিবরণে উঠে এসেছে সাভার উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজীব ও তার ভাই সমরের কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদের কাহিনি। নিউজের পর কালিয়াকৈরে কর্মরত সাব-রেজিস্টার দুর্নীতিবাজ মো. নুরুল আমিন তালুকদারের ১২ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ করেছে দুদক। শেরপুরের শ্রীবর্দী রেঞ্জের বনায়নেরই ১০ কোটি টাকার গরমিলের তথ্যও মিলেছে সংবাদ সূত্রে।
রাজবাড়ীর সাবেক সিভিল সার্জন ও তার সহধর্মিনী ময়মনসিংহের একটি সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের স্বপ্নের আলাদিনের চেরাগ। ময়মনসিংহ শহরের প্রাণকেন্দ্র প্রায় ৬ কোটি টাকা খরচ করে ৩২ শতাংশ জমির মধ্যে ছয়তলা বিশিষ্ট আলীশান বাড়ি নির্মাণ করেছেন। দিগারকান্দা এলাকায় জমি ক্রয় করেছেন আরও ৬ কোটি টাকার। সেখানে বাড়ি নির্মাণে খরচ করেছেন প্রায় ১০ কোটি টাকা। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী কক্সবাজারে পোস্টিং নিতেই দুই কোটি টাকা ঘুস দিচ্ছেন। কোটি কোটি টাকা নিয়ে উধাও হওয়া সাতক্ষীরার প্রাননাথ দাশ অবশেষে ভারতীয় পুলিশ এর কাছে আটক হয়েছে। এপার থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে নির্বিঘ্নে কিভাবে পালিয়ে গেল প্রশ্ন উঠছে সেসব নিয়ে। এ রকম শত শত লুটপাটের কাহিনি বেরিয়ে এসেছে এবং প্রতিদিনই বের হচ্ছে।
আসলে তথ্য উদঘাটন আর সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা সক্ষমতা হারায়নি মোটেও, বরং সরকারের তরফ থেকে উৎসাহ যোগানের ঘাটতি ছিল বরাবরই। এখন সরকার সক্রিয় হতেই সাংবাদিকরা তৎপর হয়ে উঠেছেন। তবে উৎসাহব্যঞ্জক খবরা খবরের পাশাপাশি হতাশার তথ্যও প্রকাশ হয়েছে। বলা হয়েছে, দুর্নীতিবাজ-লুটেরাদের সংবাদ প্রকাশ হতেই দুদকের কর্মকর্তারা তাদের কাছে হাজির হচ্ছেন তড়িৎ গতিতে। কিন্তু সবকিছু রেকর্ডপত্র ও রেজিস্টার্ডে নাকি উল্লেখ থাকছে না। এ কারণে যাদের লুটপাটের খবর তুলে ধরা হচ্ছে তাদের ব্যাপারে ফলোআপ রিপোর্ট হওয়াটাও জরুরি বলে মনে করছেন পাঠক সমাজ।
•