একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে দেশের প্রচলিত নিয়ম, নীতি অনুসরণ করে পাসপোর্ট প্রাপ্তি সকল নাগরিকের অধিকার। তবে অধিকাংশ সময়ে অসংখ্য ভুক্তভোগী দালাল চক্রের সদস্যকে পাসপোর্ট করতে দিয়ে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার পরেও যথাসময়ে পাসপোর্ট পায়নি মর্মে আমাদের নিকট লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ করেন। এসকল অভিযোগ সমূহের সত্যতা যাচাই পূর্বক র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লার একটি টিম ছায়াতদন্ত শুরু করে এবং দালাল চক্রকে হাতেনাতে গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে।
গোয়েন্দা সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১১, সিপিসি-২ এর একটি আভিযানিক দল অদ্য ২৩ জুন ২০২৪ইং তারিখ দুপুরে চাঁদপুর জেলার সদর থানাধীন তর্পচন্ডী এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে পাসপোর্ট দালাল চক্রের মূলহোতা সহ ১৬ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
পাসপোর্ট দালাল চক্রের আসামীদেরকে গ্রেফতারকালে তাদের হেফাজত হতে ১৮৩ টি ডেলিভারি স্লীপ, ০৮ টি মোবাইল ও নগদ ৪৫,২০০/- টাকা’সহ পাসপোর্ট সংক্রান্ত বিভিন্ন নথিপত্র উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলো: ১। মোঃ ইয়াসিন (২২), পিতা-ইলিয়াস, সাং-বিমলের গা, থানা-চাঁদপুর সদর, জেলা-চাঁদপুর; ২। মোঃ মামুন (৩৭), পিতা-হাতেম আলী, সাং-তর্পচন্ডী, থানা-চাঁদপুর সদর, জেলা-চাঁদপুর; ৩। মুনকার আহমেদ রাজ (২২), পিতা- মনির হোসেন, সাং-সুবিদপুুর, থানা-চাঁদপুর সদর, জেলা-চাঁদপুর; ৪। মোঃ তানভীর (২৩), পিতা-হাফেজ, সাং-পালতালুক, থানা-ফরিদগঞ্জ, জেলা-চাঁদপুর; ৫। মোবারক গাজী (৪০), পিতা-ছিটু গাজী, সাং-তর্পচন্ডী, থানা-চাঁদপুর সদর, জেলা-চাঁদপুর; ৬। মোঃ রবিউল আলম (২৮), পিতা-মিজানুর রহমান গাজী, সাং-মধ্য তর্পচন্ডী, থানা-চাঁদপুর সদর, জেলা-চাঁদপুর; ৭। মোঃ শরিফ হোসেন (৩৭), পিতা-মোঃ মুসলিম গাজী, সাং-মির্জাপুর, থানা-চাঁদপুর সদর, জেলা-চাঁদপুর; ৮। মোঃ শাওন (২২), পিতা-মোঃ শাহজাহান প্রধানিয়া, সাং-উত্তর পাইক আচড়া, থানা-চাঁদপুর সদর, জেলা-চাঁদপুর; ৯। মোঃ নুরুল ইসলাম মজুমদার (২৬), পিতা-মৃত আব্দুল বারেক মজুমদার, সাং-সহেদি পাঁচগাও, থানা-চাঁদপুর সদর, জেলা-চাঁদপুর; ১০। মোঃ অমিত হাসান (২৮), পিতা-তাজুল ইসলাম, সাং-মধ্য তর্পচন্ডী, থানা-চাঁদপুর সদর, জেলা-চাঁদপুর; ১১। মোঃ তোফাজ্জল দেওয়ান (৫৫), পিতা-কাশেম আলী দেওয়ান, সাং-দক্ষিণ তর্পচন্ডী, থানা-চাঁদপুর সদর, জেলা-চাঁদপুর; ১২। মোঃ সেলিম (৪০), পিতা-মৃত সিরাজ মিজি, সাং-মধ্য তর্পচন্ডী, থানা-চাঁদপুর সদর, জেলা-চাঁদপুর; ১৩। রানা (৩৭), পিতা-ইব্রাহিম, সাং-মৈশাদি মির্জাপুর, থানা-চাঁদপুর সদর, জেলা-চাঁদপুর; ১৪। সাজ্জাদ (১৯), পিতা-শাহজাহান গাজী, সাং-মৈশাদি মির্জাপুর, থানা-চাঁদপুর সদর, জেলা-চাঁদপুর; ১৫। মোঃ তামিম হোসেন (২৩), পিতা-মোঃ ইমরান মিজি, সাং-মৈশাদি পালকান্দি, থানা-চাঁদপুর সদর, জেলা-চাঁদপুর এবং ১৬। আরমান হোসেন (৩০), পিতা-সাত্তার পাটোয়ারী, সাং-বিশকাটালী, পোঃ রামপুর বাজার, থানা-হাজীগঞ্জ, জেলা-চাঁদপুর।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও অনুসন্ধানে গ্রেফতারকৃত আসামীরা সকলেই পাসপোর্ট দালাল চক্রের সক্রিয় সদস্য এবং তারা দীর্ঘদিন যাবৎ পাসপোর্ট তৈরী করে দেওয়ার নাম করে ভূক্তভোগী লোকজনের নিকট থেকে সরকার নির্ধারিত রেট এর অধিক বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়ে আসছিল বলে স্বীকার করে। মূলতঃ তারা সাধারণ মানুষকে সহজভাবে পাসপোর্ট তৈরী করার নাম করে বিভিন্ন এজেন্টের নিকট নিয়ে আসে। এই এজেন্ট গ্রুপ ভুক্তভোগীদের অনলাইন আবেদন ও ব্যাংক ড্রাফট করে দেওয়ার পাশাপাশি দ্রুতসময়ে পাসপোর্ট দিবে বলে ডেলিভারী স্লীপ নিজেদের নিকট রেখে দেয় এবং বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে পাসপোর্ট ডেলিভারী করার নির্দিষ্ট তারিখ নিধারণ করে। এভাবেই তাদের কাছে টাকা জমা দিলে তারা বিভিন্নভাবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জালিয়াতি মাধ্যমে প্রস্তুত করে সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করে পাসপোর্ট অফিস থেকে পাসপোর্ট সংগ্রহ করার ব্যবস্থা করে আসছিল বলে মর্মে জানায়।
উক্ত বিষয়ে গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে চাঁদপুর জেলার সদর থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।