ননদও একই কায়দায় সুবিধাভোগী
১৯৯৫ সাল থেকেই প্রশ্নফাঁস হতো, তবে তা সীমিত পরিসরে। ২০০২ সাল থেকে ব্যাপক হারে প্রশ্নফাঁস হতো। প্রশ্নফাঁসের অফিস হয়ে দাঁড়িয়েছিল পিএসসি। যেখানে যা খুশি করা যেত। প্রিলিমিনারি ও লিখিত দুই পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস হতো। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দলীয় নেতা থেকে শুরু করে রিকশাচালক, পান দোকানদারসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রশ্নফাঁসের সিন্ডিকেটে জড়িয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।
লালমনিরহাটের আদিতমারি উপজেলায় একজন আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান প্রশ্নফাঁসে জড়িত ছিলেন। তার নাম এখন অনেকের মুখে মুখে।
এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিষয়টি আমরা জেনেছি। তার দলে থাকার সুযোগ নেই। তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সিআইডির পর্যালোচনায় বেরিয়ে এসেছে, ৪০তম বিসিএস পরীক্ষায় পুলিশ ক্যাডারে ২৪টি জেলার কোনও প্রার্থী নির্বাচিত হয়নি। মোট ৭০ জন উত্তীর্ণ হন। এর মধ্যে নারী মাত্র সাত জন। ৪১তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে ১৬ জেলায় কোনও প্রার্থী নির্বাচিত হয়নি। মোট ১০০ জন উত্তীর্ণ হয়, এর মধ্যে নারী মাত্র চার জন। এখানে কোটা পূরণ করা হয়নি। ৪৩তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে ১৪ জেলায় কোনো প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়নি। মোট ১০০ জন উত্তীর্ণ হন, এর মধ্যে ৯ জন নারী। সিআইডি এই তিনটি বিসিএস পরীক্ষা পর্যালোচনা করেছে।
এতে দেখা গেছে, যেসব জেলায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে, তারাই উত্তীর্ণ হয়েছেন। শুধু পুলিশ ক্যাডার নয়, সকল ক্যাডারে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। প্রশ্নফাঁসের কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তারা এই সুবিধা পেয়েছে।
প্রশ্নফাঁস চক্রের দেশব্যাপী নেটওয়ার্ক রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তারা কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। বিসিএস পরীক্ষার সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট, পিএসসির সেই কর্মকর্তাদের অনেকে প্রশ্নফাঁসে জড়িত। অনেক কর্মকর্তা পলাতক রয়েছে। যাদের নাম আসছে, তাদের গ্রেপ্তারে অভিযানে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।