বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মু. তাহের বলেছেন, শ্রমিক ময়দানে দুঃসাহসিক ও গ্রহণযোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তুলতে দায়িত্বশীলদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।
তিনি গতকাল ১৩ জুলাই শনিবার কুমিল্লার একটি মিলনায়তনে ফেডারেশনের উদ্যোগে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বাছাইকৃত দায়িত্বশীল শিক্ষাশিবির-২০২৪ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ.ন.ম শামসুল ইসলাম-এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান-এর সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা মাওলানা এটিএম মা’ছুম, মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, অধ্যাপক লিয়াকত আলী ভূঁইয়া, ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভপতি লস্কর মো. তাসলিম, মজিবুর রহমান ভূঁইয়া। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলমগীর হোসাইন, আব্দুস সালাম, এস এম লুৎফর রহমান ও মুহাম্মাদ ইসহাক প্রমুখ।
আব্দুল্লাহ মু. তাহের বলেন, বর্তমানে শ্রমিকরা নানাভাবে তাদের অধিকার হতে বঞ্চিত হচ্ছে, তারা তাদের ন্যায্য মজুরি ও অধিকার পাচ্ছে না। বৈষম্য ও আইনের অপপ্রয়োগের মাধ্যমে তাদেরকে অধিকার হতে বঞ্চিত করা হয়। শ্রমিকের অধিকার আদায়ে দায়িত্বশীলদের যেকোনো পরিস্থিতিতে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে আপসহীন ভূমিকা পালন করতে হবে। অধঃস্তনদের মাঝে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা এবং কর্মীদের প্রতি দয়ার্দ্য ও ক্ষমাশীল হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি ত্যাগ ও কুরবানির মানসিকতায় নিজেদেরকে গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, যে কোন পরিস্থিতিতে সাহসিকতার সাথে নিজেদের দক্ষতা ও সক্ষমতার আলোকে ময়দানকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে এবং সর্বাবস্থায় আল্লাহর উপরে ভরসা করতে হবে। আমাদের বক্তব্য ও ভাষা সুস্পষ্ট হতে হবে। কথা কাজে গড়মিল পরিহার করে স্পষ্টবাদী ব্যক্তিত্ব হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে। আমরা যে আদর্শকে লালন করি, সর্বস্তরের শ্রমিকদের মাঝে সে আদর্শের দাওয়াত দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ছড়িয়ে দিতে হবে। ময়দানে দায়িত্বশীলদের এমনভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে হবে যাতে শ্রমিকরা আকৃষ্ট হয়ে এগিয়ে আসে। আমাদের এটাও মনে রাখতে হবে যে দায়িত্বশীলদের গতিহীনতায় জনশক্তির মধ্যে যেন স্থবিরতা সৃষ্টি না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
মাওলানা এটিএম মা’ছুম বলেন, শ্রমিকদের অধিকারের কথা একমাত্র ইসলামই সর্বপ্রথম সুস্পষ্ট ভাষায় মানবতার সামনে তুলে ধরেছে। তাদেরকে তাদের অধিকার সম্পর্কে জানতে দেওয়া হচ্ছে না। তাই তাদের মাঝে ইসলামের আদর্শকে তুলে ধরতে পারলে তারা ইসলামী আদর্শের ধাবিত হবে। এ জন্য শ্রমিক দায়িত্বশীলদের কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে।
মাওলানা মুহাম্মদ শাহাজাহান বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবন অনুসরণের মধ্যেই রয়েছে মানবতার মুক্তি ও কল্যাণ। শ্রমিক দায়িত্বশীলদেরকে জীবনের সকল ক্ষেত্রে রাসুলুল্লাহর সুন্নাহকে অনুসরণের মাধ্যমে আদর্শ ও পুতঃপবিত্র জীবন গঠনে ব্রতী হতে হবে।
অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের বলেন, শ্রমিকদের বোধগম্য সহজ সরল ভাষায় দরদী মন নিয়ে তাদের কাছে ইসলামের আহ্বান তুলে ধরতে হবে। জীবন সম্পর্কে তাদেরকে আশাবাদী করতে হবে। তাদের সামনে আশা ও প্রেরণামূলক বক্তব্য উপস্থাপন করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে আ.ন.ম শামসুল ইসলাম বলেন, ভীতিহীন এবং বাধামুক্ত ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করতে না পারলে শ্রমিকের অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত হবে না। তাই আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও শ্রমজীবী মানুষের অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্য ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।