সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবু ও শ্যামল দত্তকে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া সীমান্ত থেকে আটক করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
ধোবাউড়া থানার ওসি মো. চাঁন মিয়া বলছেন, সোমবার ভোর ৬ টার দিকে দক্ষিণ মাইজপাড়া ও পোড়াকান্দুলিয়া সীমান্তের মাঝামামাঝি এলাকায় একটি প্রাইভেটকারসহ চারজনকে আটক করে ‘এলাকাবাসী’। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের থানা হেফাজতে নেয়। আটক বাকি দুজন হলেন, একাত্তর টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার মাহবুবুর রহমান এবং প্রাইভেটকারের চালক সেলিম।
ওসি চাঁন মিয়া বলেন, “তারা সীমান্ত হয়ে অবৈধভাবে ভারতে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। তাদের বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ‘সাংবাদিকতার আড়ালে জাতীয় স্বার্থ এবং রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার’ অভিযোগে যে ৫১জন সাংবাদিককে কর্মস্থল থেকে বহিষ্কার এবং সাংবাদিক অঙ্গনে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী অন্দোলনকারীরা, সেখানে মোজাম্মেল বাবু ও শ্যামল দত্তর নামও ছিল।ছাত্রদের অন্দোলন যখন তুঙ্গে, তখন একটি বিবৃতি দিয়েছিল মোজাম্মেল বাবুর নেতৃত্বাধীন এডিটরস গিল্ড। শ্যামল দত্তও ওই সংগঠনের একজন সদস্য।
১৬ জুলাই ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, “একটি মহল কোটা সংস্কারের আন্দোলনকে মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে। এ ধরনের বিভাজন থেকে বিরত থাকতে সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে এডিটরস গিল্ড।”
আন্দোলনের মধ্যে রাজধানীর মিরপুরে মো. ফজলু হত্যার ঘটনায় ভাসানটেক থানায় দায়ের করা এক মামলায় শ্যামল দত্ত আসামি। আর যাত্রাবাড়ীতে শিক্ষার্থী নাঈম হাওলাদার হত্যা মামলার আসামির তালিকায় রয়েছে মোজাম্মেল বাবুর নাম।
৫ অগাস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পরদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া হয়ে সপরিবারে ভারতে যাওয়ার সময় শ্যামল দত্তকে আটকে দিয়েছিল ইমিগ্রেশন পুলিশ। তবে এর পর থেকে তাকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। আর মোজাম্মেল বাবু সরকার পতনের পর থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন।
এর আগে গত ২১ অগাস্ট ফান্সে যাওয়ার চেষ্টার সময় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয় সাংবাদিক দম্পতি শাকিল আহমেদ ও ফারজানা রূপাকে।
শাকিল একাত্তর টেলিভিশনের বার্তা প্রধান এবং রূপা একই টেলিভিশনের প্রিন্সিপাল করেসপনডেন্ট ছিলেন। তাদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে দুটি হত্যা মামলায় দুই দফা রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে পুলিশ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যে সাংবাদিকদের নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছিল, সেখানে শাকিল ও রূপার নামও ছিল। সরকার পতনের পরপর গত ৮ অগাস্ট শাকিল ও রূপাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয় একাত্তর টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ।