ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে “ভোলার মহিষের দুধের কাঁচা দই”। শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেড মার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) ২৪/০৯/২০২৪ তারিখে এক সভায় এ অনুমোদন দেয়।
জানা গেছে, কোনো একটি দেশ কিংবা এলাকার নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের মাটি, পানি, আবহাওয়ার প্রেক্ষাপটে সেখানকার জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি যদি কোনো একটি পণ্য উৎপাদনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তাহলে সেটিকে সেই দেশের জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
ভোলার মহিষের দুধের কাঁচা দই প্রায় ২০০ বছরের ঐতিহ্য বহন চলছে। ভোলা জেলা প্রশাসকের আবেদন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও যাচাই-বাছাই শেষে ভোলার কাঁচা দই’র জিআই পণ্য হিসেবে ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং তারিখে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে এক বিজ্ঞপ্তির জানিয়েছেন ডিপিডিটির ডেপুটির মহাপরিচালক মোঃ মুনিম হাসান।
সূত্রে আরো জানা যায়, ভোলার মহিষের দুধের কাঁচা দই বাংলাদেশের অন্যান্য জেলা কিংবা অঞ্চলে দই উৎপাদিত হলেও কিছু বিশেষত্বের কারণে “ভোলার মহিষের দুধের কাঁচা দই’র” খ্যাতি দেশজুড়ে। উৎপাদন ব্যবস্থার প্রতিটি পর্যায়ে কারিগরদের (উৎপাদক) বিশেষ পদ্ধতি অনুসরণের পাশাপাশি মান নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে তারা যতœবান হওয়ায় ভোলার মহিষের দুধের কাঁচা দই স্বাদে-গুণে তুলনাহীন।
কোনো পণ্যের জিআই স্বীকৃতির মাধ্যমে কোনো পণ্য কোনো নির্দিষ্ট এলাকার বলে চিহ্নিত হয়। ফলে পণ্যটির বাণিজ্যিকীকরণের সুবিধা হয়। আর পণ্যটি যখন বাইরের দেশে পাঠানো হয়, তখন জিআই স্বীকৃতি পণ্যের মান ও দাম নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখে।
উল্লেখ্য, দ্বীপজেলা ভোলার ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিত মহিষের দুধের কাঁচা দধি। এটি ভোলার প্রায় ২০০ বছরের ঐতিহ্য বহন করে। এখানকার অতিথি আপ্যায়নের অন্যতম উপাদন এটি। এ টক দধি গুড়, মিষ্টি অথবা চিনি দিয়ে খাওয়া যায়। দধি সব সামাজিক, পারিবারিক ও ঘরোয়া ভোজে থাকতেই হবে। এ ছাড়া খাবার হজমে কাঁচা দুধের দধি বাড়তি সহায়তা করায় এর জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বি।
স্থানীয়রা খাবারের শেষে ভাতের সঙ্গে দই খায়। দই-চিড়ার সঙ্গে হালকা মুড়ি ও চিনি মিশিয়ে মজা করে খাওয়া যায়। গরমের মৌসুমে দইয়ের সঙ্গে হালকা পানি ও চিনি মিশিয়ে ঘোল তৈরি করা হয়। এ ঘোল গরমের দিনে মানবদেহকে ঠা-া রাখে। অনেকে কুটুম বাড়িসহ দূর-দূরান্তের পছন্দের মানুষের উপহার কিংবা দেশের বাইরেও প্রিয়জনদের কাছে এখানকার দধি পাঠান অনেকে। তথ্য মতে, দইয়ে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, ভিটামিনসহ অন্যান্য উপদান রয়েছে, যা আমাদের দেহের জন্য খুবই উপকারী।