কক্সবাজারের উখিয়ায় সংরক্ষিত বনাঞ্চলের জায়গা আইনবহির্ভূতভাবে করা হচ্ছে দখল, সাম্প্রতিক সময়ে এধরণের কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পেলেও বনবিভাগ কিংবা প্রশাসনের তেমন কোনো ভূমিকা চোখে পড়ছে না।
উপজেলার টিএন্ডটি এলাকায় কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কের পাশে প্রায় ৩০ শতকের বেশি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের জমি অবৈধভাবে দখলের পর এবার ঐ স্থানে দালান নির্মাণের লক্ষ্যে ইটের প্রাচীর নির্মাণ করছেন এক দখলদার।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় সেখানে নির্মাণ কাজ করছে রোহিঙ্গা শ্রমিকরা, মজুদ করা হয়েছে হাজারো ইট।
পালংখালীর এলাকার বাসিন্দা শাহ আলম নামের এক প্রবাসী এই জায়গা দখলে নেন এবং আত্মীয়স্বজনের সহযোগিতা নিয়ে তিনি সেখানে নির্মাণযজ্ঞ চালাচ্ছেন।
সরেজমিনে উপস্থিত দখলকৃত ভূমিতে থাকা আধাপাকা বাড়ির বাসিন্দা এক নারী
প্রতিবেদককে নিজের নাম প্রকাশে অনীহা দেখান এবং উত্তেজিত স্বরে বলেন, ” বনবিভাগকে ৪০ হাজার টাকা দিয়ে কাজ শুরু করেছি, সামনে বিল্ডিংও তুলব।আপনার অসুবিধা থাকলে বনবিভাগকে জিজ্ঞেস করেন।”
উখিয়া কলেজ, ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ও কলেজ, সেনাক্যাম্প সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার পাশে এমন দখলযজ্ঞ চললেও চুপ রয়েছে বনবিভাগ।
অনুসন্ধান বলছে, একশ্রেণির দালালচক্র বনবিভাগের কথিত হেডম্যান ভিলেজার পরিচয়ে দখলদারদের সহযোগিতা করে থাকে এবং তারা বনবিভাগকে ম্যানেজ করার কথা বলে হাতিয়ে নেয় মোটাঅংকের অর্থ।
পতিত স্বৈরাচারের আমলে কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের আওতাধীন উখিয়া রেঞ্জের ওয়ালাপালং ও সদর বিট ঘিরে এক প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতার নিকট আত্মীয় পরিচয়ে সক্রিয় ছিলো কালা সোনা সিন্ডিকেট।
কথিত এই দালাল সরকার পতনের পর কিছুদিন নিষ্ক্রিয় থাকলেও আবারো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে জানান স্থানীয়রা।
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, ” কালা সোনা বনবিভাগের দালাল, সে মূলত ওয়ালা বিটের অফিসার রনিকে ম্যান্টেইন করে দখলদারদের নির্মাণ কাজের সুযোগ করে দিচ্ছে।”
এবিষয়ে জানতে চেয়ে কথিত দালাল কালাসোনার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও উত্তর মেলেনি অন্যদিকে বিট কর্মকর্তা রণির মুঠোফোনে সংযোগ পাওয়া যায়নি।
তবে উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা ও সহকারী বন সংরক্ষক শাহীনুর ইসলাম শাহীন জানিয়েছেন, বনবিভাগের জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ।
ম্যানেজ হওয়ার বিষয়টি ভিত্তিহীন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ” আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি সেখানেও অভিযান চালাবো এবং দখলদারের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিবো।”