পুরো কুড়িগ্রাম জেলা জুড়ে চলছে বালু,মাটি বিক্রির উৎসব। বালু মাটি খেকো দের কবল থেকে বাদ পরেনি ব্রাহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলা কোনটাই। এ-ই ধ্বংসাত্মক উৎসবের আয়োজনে মেতেছে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকা একটি সিন্ডিকেট মহল। বিশেষ করে রাজারহাট, উলিপুর, চিলমারীতে এ-ই ধ্বংসাত্মক আয়োজনের প্রভাব উল্লেখযোগ্য। কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না, এ-ই সিন্ডিকেট মহলকে। সাংবাদিক লেখা লেখি করলে এবং প্রশাসন আইনগত ব্যবস্থা নিলে পরতে হচ্ছে হুমকির মুখে। নতুন বাংলাদেশে অপরাধীদের অপরাধ করার অধিকার ও যেন আইনসিদ্ধ, এমনটাই মনে হয়!!!
লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধার বিভিন্ন উপজেলার বুক চিরে বয়ে চলেছে বুড়ী তিস্তা নদী। অসচেতনতায় কালের পরিক্রমায় ধীরে ধীরে ভরাট হয়ে গভীরতা হারিয়ে ফেলে,হারিয়ে ফেলে তার বয়ে চলার সক্ষমতা। ফলে বৃষ্টির মৌসুমে এ তিস্তা নদী বিস্তৃত এলাজা লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম যেদিক দিয়ে বয়ে গেছে এ-ই নদী, সেসব জলাবদ্ধতা ও বণ্যা কবলিত হয়। কৃষি ফসল নষ্ট হয়, বৃদ্ধি পায় পানি বাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব। জনজীবনে প্রতিফলিত হয়ে এ-র বিরুপ প্রভাব। কৃষি ফসল নষ্ট হবার কারনে জাতীয় জীবনে খাদ্য ঘাটতি দেখা দেয়। এ-ই জাতীয় খাদ্য ঘাটতি পুরনে এবং জাতির খাদ্যের চাহিদা পুরন করতে সরকারকে অন্য রাষ্ট্র থেকে উচ্চমূল্যে বৈদেশিক মুদ্রায় বিনিময়ে খাদ্য সংগ্রহ করতে হয়। এতে যেমন বৈদেশিক মুদ্রা অপচয় হয়, অপরদিকে উচ্চমূল্যে কেনা এ-ই খাদ্য ভর্তুকি দিয়ে জনগনের মাঝে বিক্রি করা হয়, পুরো ব্যাপারটা পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, একদিকে বৈদেশিক মুদ্রা অপচয়, অপরদিকে দেশীয় মুদ্রা ঘাটতি, মোট বিষয় হলো আমরা দুই দিক দিয়েই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। বিগত সরকার জলাবদ্ধতা,বণ্যার কবল থেকে কৃষি ফসল ও জনজীবনকে রক্ষা করতে লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন উপজেলার বুক চিরে বয়ে যাওয়া এ-ই বুড়ী তিস্তা নদী খনন প্রকল্প হাতে নেয়। রাজস্বের কোটি কোটি অর্থ ব্যয় করে খনন করা হয় বুড়ী তিস্তা, তৈরি করা হয় নদীর দুপারের বাধ / গড়। যৌবন ফিরে পায় বুড়ী তিস্তা। বৃদ্ধি পায় মাছের প্রজনন, এক ফসলী জমি দ্বী ফসলী জমিতে পরিনত হয়,জলাবদ্ধতা ও বণ্যা প্রাদুর্ভাব কমে আসে জনজীবনে। বিগত সরকারের হাজারো খারাপ কাজের মধ্যে বুড়ী তিস্তা খনন একটি প্রশংসনীয়। বিগত সরকারের সময়েও একটি মহল তিস্তা খননের সুফলকে নাস্যাৎ করতে তিস্তার দুই পারের গড়ের মাটি কেটে বিক্রি করে, তিস্তাকে আবারও আগের মতো করার চেষ্টা করে, তখন এ-ই ন্যাক্যার জনক কাজগুলো যুবলীগ, ছাত্রলীগ, আওয়ামিলীগ এ-র ছত্রছায়ায় থাকা একটি মহল। বর্তমান সরকারের সময়েও ন্যাক্যারজনক এ-ই কাজটি করছে বি,এন,পি এ-র রাজনৈতিক দলের পরিচয়ে একটি মহল। তারা নিজেও জানে তারা কি করে? এরা রাষ্ট্রের শত্রু, এরা কিভাবে একটা খ্যাতনামা রাজনৈতিক দলের সদস্য হতে পারে? সরেজমিনে অনুসন্ধানে দেখায়ায়, কুড়িগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার যেদিক দিয়ে তিস্তা নদী বয়ে গেছে, যেদিকে খনন করা হয়েছিল, তার দুই পারের গড় প্রায় নিঃচিহ্ন। বিগত সরকারের সময় একগ্রুপ, বর্তমান সরকারের সময়ে বিএনপির নামে আরেক গ্রুপ। অপরাধ একই রয়েছে, শুধু পরিবর্তন হয়েছে অপরাধীর। আরও গভীর অনুসন্ধানে জানা যায়, বিগত সময়ে ব্রাহ্মপু্ত্র নদের বালু চুরি, তিস্তা নদী গড়ের মাটি চুরির সাথে জড়িত ছিলেন, সাবেক এমপি মতিন, তার সহকারী বাবলু, মতিন এমপির ছেলে মারযান, গবা পান্ডের ছেলে কৌনিক, ধামশ্রেনী ইউনিয়নের আওয়ামী নেতা সূজা প্রফেসর, মাহফুজ উলিপুর উপজেলার ধামশ্রেনী, হাতিয়ে ইউনিয়ন এবং উপজেলার গোলাম হোসেন মন্টু সহ উলিপুর আওয়ামিলীগ এ-র নেতৃস্থানীয় ব্যাক্তি। চিলমারীর উপজেলার বালু সিন্ডিকেট চলতো উপজেলা চেয়ারম্যান, এবং রানীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনজুরুল এ-র তত্তাবধানে। শুধু তিস্তা, ব্রাহ্মপুত্রই নয়, ধরলা নদীও বাদ পরেনি বালু খেকো, মাটি খেকোদের কবল থেকে। বর্তমান সরকারের সময়েও প্রেক্ষাপট একই রয়েছে, শুধু পরিবর্তন হয়েছে ব্যাক্তির নামের, রাজনৈতিক দলের। কুড়িগ্রাম ধরলার পাড়, উলিপুরে তিস্তা, চিলমারীর ব্রাহ্মপুত্র, সরেজমিনে অনুসন্ধানে দেখা যায়, চিলমারীর ফকিরের হাট, কাচকল এলাকায় প্রতিযোগিতা করে বালু মহল করা হচ্ছে, প্রশাসন একটি বন্ধ করে দিলে পরের দিন আরও তিনটি বালু মহল তৈরি হয়ে। জোর দৌড় পাল্লা চলে বালু মহল নিয়ে। ব্রাহ্মপুত্র নদী এলাকা জুড়ে রয়েছে অর্ধশতাধিক ড্রেজার, এসব করে বালু কার তত্তাবধানে পরিচালিত হয়ে আসছে, জানেনা কেউই, তবে কিভাবে চলে? ফকিরের হাট এলাকার স্থানীয় সূত্র জানায়, রানীগঞ্জ সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি সমর্থিত আঃ করিম এ-র নেতৃত্বে কয়েকটি ড্রেজার চলে…